গল্প: শিরোনামহীন


 শিরোনামহীন

লেখক : দুঃখী মানুষ।


একটি মানুষ ছিল। না, তার কোনো নাম নেই। যেমন নেই সে হাসে, কাঁদে, বাঁচে এমন কাউকে জিজ্ঞেস করার কেউ।

সে একটা ঘরে থাকে—একটা ছোট ঘর, চারদিকে দেয়াল, মাথার উপর ছাদের ফাঁক দিয়ে মাঝে মাঝে বৃষ্টি পড়ে, আর দেয়ালে ঝুলে থাকা একটা ঘড়ি শুধু সময় গুনে।


প্রতিদিন সকালে সে উঠে। কেউ ডাকে না, কেউ জিজ্ঞেসও করে না কেমন ঘুমিয়েছে। সে নিজেই নিজের ঘুম ভাঙায়—

আর নিজের ছায়ার সঙ্গেই কথা বলে।


বাজারে যায়, রান্না করে, আবার খায়।

যখন খায়, তখন খাওয়ার টেবিলের একপাশ ফাঁকা থাকে—যেন কেউ ছিল সেখানে, কোনোদিন।

আসলে কেউ ছিল না।

সে শুধু ভাবে, "যদি কেউ থাকত?"


রাত হলেই ঘরটা আরও চুপচাপ হয়ে যায়।

চুপচাপ নয়, যেন নিঃশব্দ চিৎকারে ভরে ওঠে।

বাইরের কুকুরের ডাকে তার বুক কেঁপে ওঠে—

কারণ সেও জানে, একাকীত্ব কাকে বলে।


একদিন সে আয়নায় নিজের দিকে তাকিয়ে বলেছিল—

"তুই ঠিক আছিস তো?"

নিজের প্রতিবিম্বটাও উত্তর দেয়নি।


এক রাতে সে হঠাৎ সব লাইট নিভিয়ে দেয়।

ঘরের ভেতর শুধু চাঁদের আলো।

কাঁধে মাথা রাখার কেউ নেই, কথার জবাব দেওয়ার কেউ নেই, শুধু পুরনো কিছু শব্দ মাথার ভেতর বাজে—

"তোমাকে কে চায়?"

"তোমার কথা শুনে কার কী আসে যায়?"

"তুমি তো কারও কিছু না!"


সে চোখ বন্ধ করে—

এক ফোঁটা অশ্রু গড়িয়ে পড়ে, বালিশ ভিজে যায়।

কেউ জানে না, কেউ শুনে না।


সে এখনো বেঁচে আছে, ঠিক যেমন পুরনো একটা দেয়াল বেঁচে থাকে -----

মন্তব্যসমূহ

  1. গল্পটার সাথে আমার বাস্তব জীবনের মিল খুজে পাওয়া যাচ্ছে
    ধন্যবাদ প্রিয় লেখক।

    উত্তরমুছুন

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

ভাইরাল ত্রাণ দাতা বর্তমান সময়ের ভাইরাল ট্রেন্ড নিয়ে একটি গল্প)

শিরোনাম: শেষ চিঠি