গল্পের নাম: "তোমার অপেক্ষায়"
গল্পের নাম: "তোমার অপেক্ষায়"
শিরোনাম : রোমান্টিক
বর্ষার এক নিঃশব্দ দুপুর। শহরের সব রাস্তা যেন ঝিমিয়ে পড়েছে। জানালার পাশে বসে বইয়ের পাতায় চোখ রেখে শায়লা কেবলই অন্যমনস্ক হয়ে পড়ছে। তার চোখ বারবার ছাদে ওঠা সিঁড়ির দিকে চলে যায়।
আজ ঠিক পাঁচ বছর আগে এই দিনে, ঠিক এই সময়ে, প্রথম দেখা হয়েছিল ওদের। সেদিনও বৃষ্টি পড়ছিল, আর অরণ্য ছাতাটা শায়লার মাথার ওপরে ধরে বলেছিল,
— "ভিজবেন না, একসাথে চলুন।"
সেই দিন থেকেই শুরু।
২.
শায়লা আর অরণ্য—দুজন দুই ধরনের মানুষ।
অরণ্য ছিল হাসিখুশি, চঞ্চল, সবার সঙ্গে মিশে যায়। আর শায়লা—চুপচাপ, নিজের মধ্যে ডুবে থাকা এক মেয়ের নাম। কিন্তু অরণ্যর ছোঁয়ায় শায়লার ভেতরের রঙগুলো ফুটে উঠতে শুরু করে।
তারা একসাথে হেঁটেছে বইমেলায়, একসাথে ভাগ করেছে এক কাপ কফি, সন্ধ্যায় ছাদে বসে তারা দেখেছে দূরের আকাশের তারা।
— "একদিন যদি আমি না থাকি?"
শায়লার এই কথায় অরণ্য হেসে বলেছিল,
— "তুমি থাকো কি না থাকো, আমি তো থাকবো। তোমার অপেক্ষায়।"
৩.
কিন্তু সময় সবকিছু বদলে দেয়।
অরণ্য চলে গিয়েছিল হঠাৎই—বিদেশে পড়তে। একটা বড় স্কলারশিপ পেয়েছিল। আর শায়লা, শতচেষ্টা করেও বলতে পারেনি,
— "থেমে যাও... আমার পাশে থাকো।"
শেষবার বিমানবন্দরে দেখা।
অরণ্য বলেছিল,
— "তোমার চোখে আমি অনেক কিছু পড়তে পারি শায়লা। কিন্তু তুমি কিছু বলো না কেন?"
শায়লা চুপ করেই ছিল, কেবল চোখের কোনে অশ্রু।
৪.
আজ পাঁচ বছর পর...
বেল বাজে। শায়লার বুক ধক করে ওঠে।
দরজা খুলতেই সামনে দাঁড়িয়ে এক পরিচিত মুখ।
অরণ্য!
হাতে একটা ছাতা, হাসি মুখে বলে,
— "তুমি জানো, আমি আসবো। বলেছিলাম না, তোমার অপেক্ষায় থাকবো?"
শায়লার চোখ ভিজে যায়। এই প্রথম সে কিছু না লুকিয়ে বলে ফেলে,
— "আর কখনও যেও না। আমার আর তোমার পৃথিবীটা এখানেই হোক।"
অরণ্য এগিয়ে এসে তার হাত ধরে,
— "এই পৃথিবীটা তো অনেক আগেই তোমার ছিল। আমি শুধু ফিরলাম।"
---
শেষে…
জীবনে কখনও কখনও কোনো সম্পর্ক হারিয়ে যায় না, কেবল অপেক্ষা করে সঠিক সময়ের। অরণ্য আর শায়লার গল্পটা তাই শুধু প্রেমের নয়, প্রতীক্ষারও।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন