ছায়াতীর্থ



 গল্পের নাম: ছায়াতীর্থ

লেখক: দুঃখী মানুষ

সময়: খ্রিষ্টপূর্ব ৫০০০ বছর | স্থান: হিমালয়ের এক গোপন উপত্যকা


সেই সময় পৃথিবী ছিল কুয়াশায় ঢাকা এক অপার রহস্য।

মানুষেরা তখনো শব্দ দিয়ে কথা বলত না—চোখের ভাষা, শরীরের নড়াচড়া, আর প্রকৃতির ইশারাই ছিল তাদের যোগাযোগের উপায়।


"আরুয়া" ছিল এক বালিকা—তখনকার এক পর্বতকণ্যা, জন্ম হয়েছিল আকাশ-ছোঁয়া পাথরের নিচে, যেখানে ঠাণ্ডা বাতাস গায়ে লাগলে আত্মা কেঁপে উঠত। আরুয়া ছিল আলাদা—সে আকাশের তারা গুনত, গাছের কান্না শুনত, আর রাতের ছায়াকে ভয় না পেয়ে ডাকত "ছায়া-মা" বলে।


একদিন রাতের ঘন অন্ধকারে, যখন চাঁদ ছিল না, আর আগুন নিভে গিয়েছিল,

পাহাড়ি গুহার ভিতরে এক কালো ছায়া এসে দাঁড়াল।

সবাই দৌড়ে পালাল, শুধু আরুয়া দাঁড়িয়ে রইল।

ছায়াটি বলল না কিছু, শুধু তার চোখদুটো ছিল যেন আকাশের আগুন।


আরুয়া হেঁটে গেল তার দিকে। তারপর নিখোঁজ।

তিনদিন পর, সে ফিরে এল—চোখে এক আলোর রেখা, কপালে আঁকা এক অদ্ভুত চিহ্ন—❂


তারপর থেকেই সে ভবিষ্যৎ বলতে পারত।

সে বলেছিল,

— “হাজার বছর পর মানুষ আগুন দিয়ে আকাশে উড়বে।

তারা ভুলে যাবে গাছের ভাষা, মাটি ছোঁয়ার আনন্দ,

কিন্তু আবারও একদিন ফিরে আসবে ছায়ার কাছে।”


আরুয়াকে সবাই "ঈশ্বরের দূত" ভাবল।

তার মৃত্যুর পর লোকেরা পাহাড়ের গুহাটিকে নাম দিল—

“ছায়াতীর্থ”—যেখানে মানুষ এখনো নিঃশব্দে বসে থাকে,

আশা করে সেই ছায়া আর একবার ফিরে আসবে।


পাঠকের জন্য প্রশ্ন:

> "আপনি যদি ছায়া হয়ে ফিরে আসতেন প্রাচীন সেই গুহায়, কী বার্তা দিয়ে যেতেন ভবিষ্যতের মানুষকে?"


মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

ভাইরাল ত্রাণ দাতা বর্তমান সময়ের ভাইরাল ট্রেন্ড নিয়ে একটি গল্প)

গল্প: শিরোনামহীন

শিরোনাম: শেষ চিঠি