ভাইরাল ত্রাণ দাতা বর্তমান সময়ের ভাইরাল ট্রেন্ড নিয়ে একটি গল্প)
(বর্তমান সময়ের ভাইরাল ট্রেন্ড)
"আসসালামু আলাইকুম ভাই ও বোনেরা! আমি এখন একটা অসহায় পরিবারের বাড়িতে এসেছি, যারা দুইদিন ধরে না খেয়ে আছে। আপনারা দেখুন, এই বৃদ্ধাকে দেখুন—এখনো মুখে হাসি রেখে দাঁড়িয়ে আছেন...
মোবাইল ক্যামেরার সামনে দাঁড়িয়ে সরোয়ার এই কথাগুলো বলল, আর পেছনে দাঁড়িয়ে থাকা এক বৃদ্ধা অপ্রস্তুতভাবে ঠোঁট চেপে ধরলেন।
সরাসরি লাইভ চলছিল। কমেন্ট আসছিল ঝড়ের মতো:
“ভাই আপনি দেবতা”
“আল্লাহ আপনাকে হায়াত দিন”
“আপনার মতো লোকই আসল মানুষ”
লাইভ শেষ করে সরোয়ার বৃদ্ধার হাতে একটা প্যাকেট দিলেন। তাতে কিছু চাল, ডাল আর একটি তার চ্যানেলের প্যাম্পলেট। বৃদ্ধা বললেন,
“ছেলে, একটা ছবি তোলো না, মেয়েটা ভাববে আমার খবর কেউ রাখে…”
সেই বৃদ্ধাকে পাশে বসিয়ে ১০টা ছবি তোলা হলো। বিভিন্ন ক্যাপশন তৈরি হলো—
“এক মায়ের কান্না”
“ত্রাণ নয়, ভালোবাসা দিতে শিখুন”
“যারা সরকারের টাকা খায়, তারা দেখুক এই ভিডিও!”
🔥 ৪ ঘণ্টার মধ্যেই ভাইরাল
১০ লাখ ভিউ
১ লাখ রিয়্যাকশন
কয়েক হাজার শেয়ার
পত্রিকায় শিরোনাম:
“ত্রাণযোদ্ধা সরোয়ার: সোশ্যাল মিডিয়ার নতুন নায়ক”
সরোয়ার এখন টকশোতে যায়, ইউটিউব থেকে ইনকাম করে, কিছু এনজিওর কাছ থেকেও স্পনসরশিপ পায়।
কিন্তু গল্পটা এখানেই থেমে থাকেনি।
📸 এক ছিন্নমূল কিশোরের ভিডিও বদলে দিল সব
এক কিশোর হঠাৎ টিকটকে এক ভিডিও আপলোড করে—
ভিডিওতে দেখা যায়, লাইভ ভিডিও শেষ হতেই বৃদ্ধার হাতে দেওয়া প্যাকেট ফেরত নিয়ে যাচ্ছে সরোয়ারের টিম।
আর বলে—
“এটা শুধু শুটিংয়ের জন্য, দাদি।”
ভিডিওতে বৃদ্ধার কান্নার শব্দ শোনা যায়।
ভিডিওটা ভাইরাল হয়ে যায় আগের ভিডিও থেকেও বেশি।
শিরোনাম এবার বদলে যায়—
“ভুয়া মানবিকতা ফাঁস!”
“ফেক ভাইরাল নায়কের মুখোশ খুলে গেল!”
🧨 পতনের শুরু
স্পনসররা মুখ ফিরিয়ে নেয়, ফলোয়ার কমে যায়, এনজিও চুক্তি বাতিল করে।
পরে সরোয়ার পুলিশের ডাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য যেতে হয়, কারণ অনুদানের টাকা নিয়েও ভুয়া কার্যক্রমের প্রমাণ মেলে।
অতঃপর
একদিন একটি ছোট চ্যানেলের সাক্ষাৎকারে সরোয়ার বলল—
"মানুষ যা দেখতে চায়, আমি তাই দেখিয়েছি।
ভালো কাজ করলে কেউ দেখে না, ক্যামেরা নিলেই ভাইরাল।
ভাইরাল হতে চেয়ে আমি নিজেই গিলে ফেলেছি নিজের আত্মাকে।"
বর্তমান সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অহরহর এই ঘটনাটি ঘটে থাকে, বাস্তব ঘটনা তুলে ধরার জন্য ধন্যবাদ
উত্তরমুছুন