বুকের ভিতর অজানা কষ্ট


বুকের ভিতর অজানা কষ্ট


রাত নামলে পৃথিবীটা নিঃশব্দ হয়ে যায়।

শহরের কোলাহল থেমে গেলে, দূরের আলো নিভে গেলে,

চারপাশের অন্ধকারে কেবল একটা ভারী নীরবতা বাজতে থাকে।

সেই নীরবতা যেন বুকের গভীর থেকে উঠে আসে,

যেন কারও অদৃশ্য হাত এসে হঠাৎ থেমে থাকা হৃদস্পন্দনকে ছুঁয়ে দেয়।


কেন জানি মনে হয়—

কোথাও কিছু হারিয়ে গেছে, অথচ আমি জানি না কী।

অপ্রাপ্তির ছায়া আমাকে প্রতিদিন অনুসরণ করে,

ভালোবাসার অপূর্ণতা যেন কুয়াশার মতো ঢেকে রাখে আমার দৃষ্টি।

যাকে চাই, তাকে পাই না;

যাকে পাই, তাকে ঠিক নিজের মতো করে ধরে রাখতে পারি না।


ভালোবাসা অনেকটা নদীর মতো—

সে আসে, ছুঁয়ে যায়, কিন্তু কখনো সম্পূর্ণভাবে আঁকড়ে ধরে না।

স্রোতের টানে ভেসে যায় স্মৃতির বালি,

আর তীরের ধারে বসে থাকা আমি কেবল শুনি ফিসফিস শব্দ—

অপূর্ণতার দীর্ঘশ্বাস।


কত কথা জমে আছে বুকের ভেতর!

অসংখ্য অনুচ্চারিত বেদনা, যেগুলো বলতে গেলে কণ্ঠ আটকে যায়।

মানুষ ভাবে আমি হাসছি, আমি স্বাভাবিক—

কেউ বোঝে না যে এই হাসির আড়ালে লুকিয়ে আছে

এক অনন্ত হাহাকার,

এক অস্পষ্ট কান্না,

এক অজানা ব্যথা, যা প্রকাশের ভাষা খুঁজে পায় না।


একাকীত্ব আসলে মানুষকে খেয়ে ফেলে না—

বরং ভেতর থেকে ধীরে ধীরে গলিয়ে দেয়।

সে প্রতিদিন নিঃশব্দে চুম্বন করে হৃদয়কে,

তারপর রেখে যায় ক্ষত,

যে ক্ষতের রং চোখে দেখা যায় না,

শুধু অনুভূত হয় গভীর এক শূন্যতার মতো।


জীবনের পথ যেন একটা দীর্ঘ অরণ্য—

কোথাও আলো আছে, কোথাও অন্ধকার,

কোথাও আবার এমন অচেনা নিস্তব্ধতা,

যেখানে নিজের পদচিহ্নের শব্দটাই একমাত্র সঙ্গী।

এই অরণ্যের ভেতর হাঁটতে হাঁটতে বুঝি—

সবকিছু হয়তো পাওয়া যায় না।

সব ভালোবাসা হয়তো পূর্ণ হয় না।

সব অশ্রু হয়তো কারও চোখে ধরা পড়ে না।


তবু মানুষ বেঁচে থাকে,

কারণ বুকের ভিতর অজানা কষ্টও কখনো কখনো

একটি নিঃশব্দ কবিতা হয়ে যায়,

যা শুধু অন্তরের মানুষই পড়তে পারে


 

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

ভাইরাল ত্রাণ দাতা বর্তমান সময়ের ভাইরাল ট্রেন্ড নিয়ে একটি গল্প)

গল্প: শিরোনামহীন

শিরোনাম: শেষ চিঠি